-->

কপোতাক্ষ নদ কবিতার সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর - ২০২২.Helped school.

 কপোতাক্ষ নদ কবিতার সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর - ২০২২.


কপোতাক্ষ নদ কবিতার সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর - ২০২২.Helpedschools.blogspot.com

কপোতাক্ষ নদ কবিতার গুরুত্বপূর্ণ  সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর যেসব পড়লে ও দেখলে তোমাদের খুবই উপকার হবে। এই সকল সৃজনশীল প্রশ্ন সকল বোর্ড,  অনুধাবন, প্রয়োগ,  উচ্চতার দক্ষতা  মূলক  প্রশ্ন  থেকে নেওয়া হয়েছে। আসা করি এই সকল সৃজনশীল প্রশ্ন পড়লে তোমাদের S.S.C পরীক্ষার কপোতাক্ষ নদ কবিতা বিষয়ের জন্য খুব উপকারী হবে। 


আরও পড়ুন ঃ 

কপোতাক্ষ নদ কবিতার বহুনির্বাচনি প্রশ্ন ও উত্তর - ২০২২ 


সৃজনশীল প্রশ্ন ০১ 

কবি আল মাহমুদের প্রিয় নদী তিতাস। এ নদী কবির শৈশবের নদী। নদীর বিক্ষুব্ধ তরঙ্গমালা কবিমনকে উদাস করেছিল । নির্মল বাতাস, নদীর শুভ্র তনুশ্রী জয় করে নিয়েছে কবির মন। তাই তাে কবি বলেছেন -

‘নীরব তৃপ্তির জন্য আনমনে বসে থেকে ঘাসে

 নির্মল বাতাস টেনে বহুক্ষণে ভরেছি এক বুক।” 

কর্মজীবনে নানা স্থানে তিনি ঘুরেছেন কিন্তু

 শৈশবের প্রিয় এ নদী স্মৃতিতে জাগরূক। 

ক. মাইকেল মধুসূদন দত্তের অমর কীর্তির নাম কী?

খ, বঙ্গের সংগীতে' বলতে কবি কী বুঝিয়েছেন? 

গ. উদ্দীপকে কপােতাক্ষ নদ' কবিতার কোন দিকটি অনুপস্থিত? ব্যাখ্যা কর। 

ঘ. কবি আল মাহমুদের অনুভূতি কপােতাক্ষ নদ' কবিতার ষটকের ভাবে ফুটে উঠেছে।”– বিশ্লেষণ কর।


উত্তর ০১


ক.

 মাইকেল মধুসূদন দত্তের অমর কীর্তির নাম ‘মেঘনাদবধ কাব্য। 

খ.

  • বঙ্গের সংগীতে’ বলতে কবি বঙ্গদেশ তথা বাংলাদেশের গানকে বুঝিয়েছেন। 

  • কবি শুধু তাঁর জন্মভূমির প্রিয় কপােতাক্ষ নদের কথাই স্মরণ করেননি, সেই সঙ্গে বঙ্গাবালীর কথাও স্মরণ করেছেন। প্রবাসজীবনে। তিনি কবিতায়, গানে শৈশবের স্মৃতিবিজড়িত নদের কথা লিখেছেন। কবি মনে করেন প্রবাসে বসে তিনি প্রেমভাবে যে কপােতাক্ষ । নদের কথা স্মরণ করেছেন বঙ্গজনের কানে তা যেন বঙ্গের সংগীতে রূপান্তরিত হয়েছে। সেই সংগীতে কপােতাক্ষ নদের কথা। আছে। আছে কবির ভালােবাসার কথা, কবির বিরহকাতরতার কথা।


গ.

  • উদ্দীপকে কপােতাক্ষ নদ' কবিতায় কবির মাতৃভূমিতে প্রিয় নদের কাছে ফিরে আসার আকুলতার দিকটি অনুপস্থিত। 

  • বাংলাদেশের সঙ্গে নদীর সম্পর্ক অবিচ্ছেদ্য। এ দেশের প্রকৃতির সঙ্গে নদ-নদী অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত। ফলে দেশের কথা, মাতৃভূমির কথা বলতে গিয়ে কবি-সাহিত্যিকরা নদ-নদীর কথাও বলেন জীবন-জীবিকার টানে মানুষকে অনেক সময় পরদেশে পরবাসে থাকতে হয়। স্বদেশের প্রতি তার টান তখন বহুগুণ বেড়ে যায় । 

  • উদ্দীপকের কবিতাংশের কবির প্রিয় নদী তিতাস। শৈশবের এই নদীর কথা ভেবে কবি স্মৃতিকাতর হয়ে পড়েন। সেই নদীর নির্মল বাতাস কবির মনকে জয় করে । কবি বুক ভরে তিতাসের বাতাস টেনে নেন। কর্মজীবনে নানা স্থানে ঘুরলেও শৈশবের এ স্মৃতির কথা কবি তুলতে পারেন না। কপােতাক্ষ নদ' কবিতার কবি স্মৃতিকাতরতার আবরণে তার অত্যুজ্জ্বল দেশপ্রেমের প্রকাশ ঘটিয়েছেন । জন্মভূমির শৈশব-কৈশােরের স্মৃতি কবির মনকে কাতর করেছে। দূরে বসেও কবি যেন কপােতাক্ষ নদের কলকল ধ্বনি শুনতে পান। তিনি প্রবাসে থেকেও কিছুতেই ভুলতে পারেন না তার কথা। তিনি ফিরে আসতে চান স্বদেশের কপােতাক্ষ নদের কাছে। এ বিষয়টি উদ্দীপকে নেই । কবির এ আকুলতাই উদ্দীপকে অনুপস্থিত।


ঘ.

  •  “কবি আল মাহমুদের অনুভূতি কপােতাক্ষ নদ' কবিতার ষটকের ভাবে ফুটে উঠেছে।”- মন্তব্যটি যথার্থ। 

  •  ইংরেজিতে Sonnet বাংলায় চতুর্দশপদী কবিতা। চৌদ্দ চরণ-সমন্বিত ভাবসংহত সুনির্দিষ্ট কবিতা সনেট । বাংলা সাহিত্যে অনেকেই সনেট রচনা করেছেন। সনেটে প্রথমত থাকে ভাবের প্রবর্তনা এবং পরবর্তীতে ভাবের পরিণতি। 

  • মাইকেল মধুসূদন দত্তের কপােতাক্ষ নদ' একটি সনেট। এ কবিতার প্রথম আট চরণ বা অষ্টকে রয়েছে ভাবের প্রবর্তনা এবং পরবর্তী ছয় চরণ মানে ষটকে রয়েছে ভাবের পরিণতি। ষটকে কবির ভাবের পরিণতি প্রকাশ পেয়েছে। তিনি কিছুতেই কপােতাক্ষ নদকে ভুলতে পারেন না। কপােতাক্ষ নদ ছাড়া অন্য কোনাে নদীর সৌন্দর্য কবির তৃষা মেটাতে পারে না। কবি তাই ফিরে আসতে চান। মাতৃভূমিতে। কিন্তু তিনি আশঙ্কা করেন কখনাে ফিরতে পারবেন কিনা। উদ্দীপকের কবি আল মাহমুদের অনুভূতি যেন কপােতাক্ষ নদ' কবিতার ষটকের ভাব। কারণ কর্মজীবনে নানা স্থানে ঘুরলেও কবি তার তিতাস নদীর কথা ভুলে যাননি। যেখানেই যান কবিরও মনে এ নদীর স্মৃতি সদা জাগরূক। 

  • উদ্দীপকের কবি আল মাহমুদ যেমন শৈশবের নদীটিকে ভুলতে পারেননি, স্মৃতিতে শৈশবের নদীটি তার যেমন সদা জাগরূক তেমনই কপােতাক্ষ নদ' কবিতার কবিও সুদূর প্রবাসে বসে স্বদেশের নদের কথা মনে করেছেন। পুনরায় তার কাছে ফিরে আসার অভিব্যক্তি ব্যক্ত করেছেন। তাই বলা হয়েছে, কবি আল মাহমুদের অনুভূতি কপােতাক্ষ নদ' কবিতার ষটকের ভাবে ফুটে উঠেছে।


সৃজনশীল প্রশ্ন ০২ 


বাংলাদেশের নিজস্ব আকাশ আছে, কিন্তু তা বেড়া দিয়ে বিচ্ছিন্ন করা নয়, বহির্বিশ্বকে তা দূর দূর করে দূরে তাড়ায় না, তার অনুকূল আলােহাওয়াকে অস্পৃশ্য করে পাশে ঠেলে না। এ আকাশ উদার, কিন্তু এর স্বাতন্ত্রে অন্য কারাে হস্তক্ষেপও সে সহ্য করে না। আকাশ, সূর্য, নদী, | গাছপালা, পাহাড়, সমুদ্র, পৃথিবীর আর সব দেশের মতাে এখানেও রয়েছে। কিন্তু ঐ সব সর্বজনীন বস্তুপুঞ্জসমৃদ্ধ প্রকৃতি এমন এক বিশেষ গুণে মণ্ডিত, যা একবারে পূর্ব বাংলারই। এ প্রকৃতির বিশিষ্টতা গুণ এ অঞ্চলের অধিবাসীদেরও স্বভাবে ও মানসগঠনে বৈশিষ্ট্য দিয়েছে, যা । আমাদের স্বতন্ত্র এক চরিত্র ও মানবিক আদলের উৎস। এখানকার প্রকৃতি ও মানুষ এক অবিচ্ছিন্ন পরিমণ্ডলে সমন্বিত হয়ে একটি স্বকীয়  স্বরূপে নির্দিষ্ট, সুস্পষ্ট।

ক. শৈশবে কবি মধুসূদন দত্ত কোন নদের তীরে বড় হয়েছেন?

খ. কপােতাক্ষ নদকে মায়ের সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে কেন?

 গ. উদ্দীপকে কপােতাক্ষ নদ' কবিতার কোন দিকটি প্রতিফলিত হয়েছে? ব্যাখ্যা কর। 

ঘ, “স্বদেশের প্রতি অনুরাগ প্রকাশের বিচারে উদ্দীপকের মূলভাব এবং কপােতাক্ষ নদ' কবিতার মূলভাব একসূত্রে গাঁথা।” মন্তব্যটি সম্পর্কে তােমার মতামত দাও।


উত্তর ০২


ক.

শৈশবে কবি মধুসূদন দত্ত কপােতাক্ষ নদের তীরে বড় হয়েছেন।

 খ.

  • কপােতাক্ষ নদকে মায়ের সঙ্গে তুলনা করার কারণ- মাতৃদুগ্ধ যেমন শিশুকে বাঁচিয়ে রাখে তেমনই কপােতাক্ষ নদের জলও কবির তৃষ্ণা দূর করেছে, এ নদের দানে ও ঋণে কবি আবদ্ধ এবং এ নদ তার শৈশবকে বাচিয়ে রেখেছে।

  •  শৈশব-কৈশােরের দিনগুলােতে কপােতাক্ষ নদই ছিল কবির আশ্রয়। তৃষ্ণা পেলে এ নদের জলেই কবি স্নেহের তৃষ্ণা মেটাতেন। কপােতাক্ষের জল ছাড়া অন্য কোনাে নদ-নদীর জল কবির স্নেহের তৃষ্ণা মেটাতে পারেনি। এ নদ শুধু একটি জলাধার নয়, কবির শৈশব-কৈশােরের সাথিও। কবি কপােতাক্ষকে তাই মায়ের সঙ্গে তুলনা করেছেন।

গ.

  • উদ্দীপকে কপােতাক্ষ নদ' কবিতার স্বদেশের বৈচিত্র্যময় দিকটি প্রতিফলিত হয়েছে।

  •  আপন রূপ-রূস-গন্ধ নিয়ে প্রকৃতি চির প্রবহমান। প্রকৃতির সৌন্দর্য কখনাে শেষ হয় না। স্বদেশ প্রকৃতির বিচিত্র সৌন্দর্য মানুষকে বিমােহিত করে। মানুষ নিজের দেশের বনবনানী, মাঠ-ঘাট, গাছপালা, নদী-নালা, পশু-পাখির রূপবৈচিত্র্য ভুলতে পারে না। কারণ সেসবের সঙ্গে তার আনন্দ-বেদনার নানা স্মৃতি জড়িয়ে আছে। 

  • উদ্দীপকে বাংলাদেশের রূপবৈচিত্র্যের কথা বলা হয়েছে। এদেশের উদার আকাশ, সূর্য, নদী, গাছপালা, পাহাড়, সমুদ্র, অন্য সব দেশের মতাে হলেও সেগুলাে যে বৈচিত্র্যময় ও স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্যে পরিপূর্ণ তা তুলে ধরা হয়েছে। পূর্ব বাংলার রূপবৈচিত্র্যের সঙ্গে এখানকার মানুষের গভীর সম্পর্ক ও বৈশিষ্ট্যের দিকটিও এতে প্রতিফলিত হয়েছে। উদ্দীপকের এই বিষয়টি কপােতাক্ষ নদ' কবিতার সৌন্দর্যচেতনার সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ। কবি আলােচ্য কবিতায় তার শৈশবের নদটির কথা বলতে গিয়ে বাংলার রূপবৈচিত্র্যকে নির্দেশ করেছেন, যা তাঁর সঙ্গে। মিলেমিশে একাকার হয়ে আছে। কপােতাক্ষের জলধারা, সবুজ বাংলার বুক চিরে বয়ে চলা উদ্দীপকের রূপবৈচিত্র্যের সঙ্গে অভিন্ন।

ঘ.

  • "স্বদেশের প্রতি অনুরাগ প্রকাশের বিচারে উদ্দীপকের মূলভাব এবং কপােতাক্ষ নদ' কবিতার মূলভাব একসূত্রে গাঁথা।” মন্তব্যটি সম্পর্কে  সম্পর্কে আমি একমত। 

  • বাংলাদেশের সঙ্গে নদীর সম্পর্ক অবিচ্ছেদ্য। এদেশের প্রকৃতির সঙ্গে নদ-নদী অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত। ফলে স্বদেশের কথা, মাতৃভূমির কথা বলতে গিয়ে কবি-সাহিত্যিকরা নদ-নদীর প্রসঙ্গ টানেন। সেসবের সঙ্গে তাদের জীবনের সম্পৃক্ততার দিক তুলে। ধরেন। তাতে স্বদেশ প্রকৃতির রূপবৈচিত্র্য ধরা পড়ে।

  •  উদ্দীপকে পূর্ব বাংলা তথা বাংলাদেশের সবুজ প্রকৃতির বিভিন্ন উপাদান উল্লেখ করে এর বৈচিত্র্য তুলে ধরা হয়েছে। এই বিষয়টি কপােতাক্ষ নদ' কবিতার কবির প্রিয় কপােতাক্ষ নদের শােভা, এ নদের জলের কলকল ধ্বনি, এর বয়ে চলার সৌন্দর্যের সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ। কবিতায় কবির ব্যক্তিহদয়ের যে আর্তি প্রকাশ পেয়েছে, তার সঙ্গে এর মিল না থাকলেও স্বদেশ প্রকৃতির যে রূপ কবিকে আকৃষ্ট করেছে, তার সঙ্গে। উদ্দীপকটির যথেষ্ট মিল রয়েছে। কারণ কবির স্বদেশ এবং উদ্দীপকের পূর্ব বাংলা এক ও অভিন্ন সৌন্দর্যের প্রতীক। 

  • আলােচ্য কবিতায় কবি প্রবাসজীবনে তার শৈশবের নদীটিকে স্মরণ করেছেন। কবি কপােতাক্ষের সঙ্গে ভার গভীর বন্ধন ও ভালােবাসার কথা বলেছেন। এতে নদীমাতৃক বাংলাদেশের রূপবৈচিত্র্যের প্রতি কবির মুগ্ধতাও প্রকাশ পেয়েছে। সেই দিক বিবেচনায়। উদ্দীপকের বিষয়টি কপােতাক্ষ নদ' কবিতার সৌন্দর্যচেতনার সঙ্গে একসূত্রে গাঁথা পড়েছে।


তথ্যসংগ্রহ ঃ পাঠ্য বই ,  লেকচার ,   ও  পান্জেরী পাঠ সহায়ক বই  ,  মডেল টেস্ট   থেকে।