জীবন-সঙ্গীত কবিতার সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর -২০২২.Helped school.
জীবন সঙ্গীত কবিতার সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর -২০২২
জীবন সঙ্গীত কবিতার গুরুত্বপূর্ণ সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর যেসব পড়লে ও দেখলে তোমাদের খুবই উপকার হবে। এই সকল সৃজনশীল প্রশ্ন সকল বোর্ড, অনুধাবন, প্রয়োগ, উচ্চতার দক্ষতা মূলক প্রশ্ন থেকে নেওয়া হয়েছে। আসা করি এই সকল সৃজনশীল প্রশ্ন পড়লে তোমাদের S.S.C পরীক্ষার জীবন সঙ্গীত কবিতা বিষয়ের জন্য খুব উপকারী হবে।
আরও পড়ুন ঃ
জীবন সঙ্গীত কবিতার বহুনির্বাচনি প্রশ্ন ও উত্তর - ২০২২
সৃজনশীল প্রশ্ন ০১
চলে যাবাে তবু আজ যতক্ষণ দেহে আছে প্রাণ
প্রাণপণে পৃথিবীর সরাব জঞ্জাল,
এ বিশ্বকে এ-শিশুর বাসযােগ্য করে যাব আমি -
নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
অবশেষে সব কাজ সেরে,
আমার দেহের রক্তে নতুন শিশুকে
করে যাব আশীর্বাদ,
তারপর হব ইতিহাস ॥
ক.জীবন-সঙ্গীত’ কবিতাটির ইংরেজি নাম কী?
খ. বৃথা জন্ম এ সংসারে'- কবি এ কথা বলতে নিষেধ করেছেন কেন?
গ. ‘জীবন-সঙ্গীত কবিতার কোন বিষয়টি উদ্দীপকে ফুটে উঠেছে? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. “জীবন-সঙ্গীত’ কবিতা ও উদ্দীপকের মূল সুরই হচ্ছে জীবনবাদ।”- মন্তব্যটি বিচার কর ।
সৃজনশীল উত্তর ০১
ক.
জীবন-সঙ্গীত' কবিতাটির ইংরেজি নাম 'A Psalm of Life'।
খ.
- মানুষের জীবন অত্যন্ত মূল্যবান; তাই কবি বৃথা জন্ম এ সংসারে’ বলতে নিষেধ করেছেন।
- মানুষ নানা কারণে আশাহত হয়ে নিজের জীবনকে ব্যর্থ মনে করে হতাশায় ভােগে, যা কোনােক্রমেই উচিত নয়। কারণ মানুষের জীবন অত্যন্ত মূল্যবান। অন্যদিকে জগতের কল্যাণের জন্য মানুষের জীবন। শুধু ব্যক্তিগত সুখ-দুঃখে মানুষের কাতর হওয়া মানবতাবােধ-বিরােধী। তিনি মনে করেন ছােট্ট এ জীবন যুদ্ধক্ষেত্রের মতাে। সেখানে যুদ্ধ করে নিজের জীবনের মহিমাকে প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। কাজেই জন্ম-বৃথা বলে হতাশ না হয়ে জীবনকে কর্মময় করে তুলতে হবে।
গ.
- জীবন-সঙ্গীত' কবিতার মানবজীবনের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য উদ্দীপকে ফুটে উঠেছে।
- সাধারণ মানুষ সংসার বলতে শুধু নিজের চারপাশের আত্মীয়স্বজনকেই বােঝে। কিন্তু মহৎ হৃদয় মানুষের কাছে সমগ্র বিশ্বই তাঁদের সংসার। তাঁরা দুঃখে-সুখে মগ্ন হয়ে থাকতে পারেন না। সুন্দর জীবনটাকে মানবজাতির কল্যাণে উৎসর্গ করাই তাদের একমাত্র উদ্দেশ্য।
- উদ্দীপকের কবি নিজের জীবনের শেষ রক্তবিন্দুর বিনিময়ে পৃথিবীকে জঞ্জালমুক্ত করার প্রতিজ্ঞা গ্রহণ করেছেন। তিনি ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য পৃথিবীকে বসবাস উপযােগী করতে চান। আর সেই মহতী হাতে আশীর্বাদ করতে চান ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে। তার আগ পর্যন্ত তিনি মৃত্যুবরণও করতে চান না। জীবন-সঙ্গীত' কবিতায়ও আমরা এই সুন্দর আর মহৎ আহ্বানটিই শুনতে পাই। সেখানে সংসারে সংসারী সেজে নিজের কাজ নিয়মিত করে যাওয়ার কথা বলা হয়েছে। এর মধ্য দিয়েই বিশ্বের কল্যাণ সাধিত হবে।
ঘ.
- “জীবন-সঙ্গীত’ কবিতা ও উদ্দীপকের মূল সুরই হচ্ছে জীবনবাদ।”- মন্তব্যটি যথার্থ।
- সময় গতিশীল, জীবনও তারই সঙ্গে চলে। সময় অসীম কিন্তু জীবন ক্ষুদ্র, পদ্মপাতার নীরের মতাে। তাই এ জীবনে অতীত বা ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তা করে কাতর হওয়া ঠিক না। মহাজ্ঞানী ও মহাজনের পথ অনুসরণ করে জীবনকে সার্থক করে তুলতে হবে। আর জীবনকে ভালােবাসতে হবে। জীবনকে ভালােবাসাই হলাে জীবনবাদের মূল কথা।
- উদ্দীপকেও আমরা একই সুরের প্রতিধ্বনি শুনতে পাই। জীবন অবিনশ্বর নয়। অথচ এখানে কর্মের মধ্য দিয়ে জীবনকে অবিনশ্বর করে ভােলার কথা বলা হয়েছে। জীবন-সঙ্গীত কবিতায় পৃথিবীকে সুন্দর করার তথা সমগ্র সংসারকে সুন্দর করার মাধ্যমে জীবনেরই জয়গান করেছেন কবি। তাই জীবনকে হতাশায় জড়িয়ে বৃথা ক্ষয় করা উচিত নয়। নিজের জীবনকে সাফল্যমণ্ডিত করে। তােলার জন্য লক্ষ্য স্থির করতে হবে। কাজের মাধ্যমে সেই লক্ষ্যকে বাস্তবায়ন করতে হবে।
- সময় নদীর স্রোতের মতােই বহমান। কারও জন্য অপেক্ষা করে না। জীবন-সঙ্গীত' কবিতায় তাই সময়কে শৈবালে জমে থাকা জলের সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে। উদ্দীপকের কবিও বৃথা সময় অপচয় করতে রাজি নন। যতক্ষণ দেহে প্রাণ আছে এ পৃথিবীর জঞ্জাল সরিয়ে তিনি নবজাতকের বাসযােগ্য বিশ্ব গড়ে তুলতে চান। এখানেই উদ্দীপক ও জীবন-সঙ্গীত’ কবিতার আবেদন সার্থক হয়ে উঠেছে।
সৃজনশীল প্রশ্ন ০২
পথিবীতে জ্ঞানের যে-বিস্ফোরণ ঘটছে, তা অন্য যেকোনাে সময়ের থেকে বেশি। ফলে আমাদের লব্ধ জ্ঞানের অনেকটাই প্রতিনিয়ত বাতিল হয়ে যাচ্ছে, সেখানে নতুন জ্ঞানের সৃষ্টি হচ্ছে। জ্ঞানের দৃষ্টিতে আমরা তেমন অগ্রসর হতে পারিনি, তবে যে-নতুন জ্ঞান সৃষ্টি হচ্ছে, তা আয়ত্ত করতে আমরা চেষ্টা করছি। সে-প্রয়াস তীব্র না হলে আমাদের শিক্ষার্থীরা সত্যি সত্যি পিছিয়ে পড়বে।
ক, হেমচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায় কত সালে মৃত্যুবরণ করেন?
খ. “স্বীয় কীর্তি ধ্বজা ধরে” বলতে কী বােঝানাে হয়েছে?
গ. উদ্দীপকটি জীবন-সঙ্গীত’ কবিতার সঙ্গে কোন দিক থেকে সম্পর্কিত? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. উদ্দীপকের মূলভাব জীবন-সঙ্গীত' কবিতার সংকল্প সাধন করার অনুপ্রেরণাদানের বিষয়টির সঙ্গে একসূত্রে গাথা। - মন্তব্যটি বিশ্লেষণ কর
উত্তর ০২
ক.
হেমচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায় ১৯০৩ সালে মৃত্যুবরণ করেন
খ.
- “স্বীয় কীর্তি ধ্বজা ধরে” বলতে বােঝানাে হয়েছে জগতে কীর্তিস্থাপনকারী ব্যক্তিরা কীর্তির নিশান উড়িয়ে কর্মে আত্মনিয়ােগ করে।
- পৃথিবীতে রয়েছে নানা ঘাত-প্রতিঘাত, উত্থান-পতন। তাই এই পৃথিবীতে সাহসী যােদ্ধার মতাে সংগ্রাম করে বেঁচে থাকতে হয় । মহাজ্ঞানী ব্যক্তিরা তাদের কাজের সুফল ভােগ করেন। মানুষ কৃতজ্ঞচিত্তেই তাদের স্মরণ করে। কী পদাঙ্ক অনুসরণ করে জগতের মানুষের কল্যাণকর কাজে আত্মনিয়ােগ করা । তবেই আমরা পৃথিবীতে বরণীয় হতে পারব। পৃথিবীর বকে নিজ কীর্তির নিশান ওড়াতে পারব।
গ.
- উদ্দীপকটি জীবন-সঙ্গীত কবিতার সংসার সমরাঙ্গনে টিকে থাকতে সবার সঙ্গে তাল মিলিয়ে কাজ করার বিষয়টির সঙ্গে সম্পর্কিত।
- মানুষের জীবন নানা সমস্যা-সংকটের মধ্য দিয়ে আবর্তিত হয়। জীবনে সুখ-দুঃখ, আনন্দ-বেদনা থাকে। প্রাণপণে সমস্ত প্রতিকূলতার বিরুদ্ধে সংগ্রাম করে মানুষকে টিকে থাকতে হয়। মানুষের এই টিকে থাকার সংগ্রামে সবচেয়ে বেশি প্রয়ােজন অদম্য ইচ্ছাশক্তি এবং উপযুক্ত জ্ঞান। জীবনকে হতাশায় মুড়িয়ে, মিথ্যা স্বপ্নে বিভাের হয়ে তা করা সম্ভব নয়।
- উদ্দীপকে যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলার জন্য জ্ঞানের প্রয়ােজনীয়তা এবং জ্ঞান অর্জনে চেষ্টার কথা বলা হয়েছে। পৃথিবীজুড়ে জ্ঞানবিজ্ঞানের অগ্রযাত্রায় জ্ঞানের যে বিকাশ প্রতিনিয়ত ঘটে চলেছে তার সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলার জ্ঞান আমাদের নেই। কারণ আমাদের অর্জিত জ্ঞান তার সঙ্গে উপযােগী হচ্ছে না। লন্ধ জ্ঞানের বাতিলের সঙ্গে সঙ্গে তাই নতুন জ্ঞানের প্রতি আমাদের চেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে। উদ্দীপকের এই বিষয়টি ‘জীবন-সঙ্গীত কবিতার সংসারজীবনে টিকে থাকার জন্য মিথ্যা স্বপ্ন ও হতাশা ভুলে জীবনকে। কর্মময় করে তােলার সঙ্গে সাদৃশ । কবিও এখানে জীবনকে হতাশায় জড়িয়ে মিথ্যার মায়াজাল থেকে বেরিয়ে আসতে বলেছেন। মহাজ্ঞানী-মহাজনদের পদাঙ্ক অনুসরণ করে জীবনকে সার্থক করার জন্য জীবন-সঙ্গীত' কবিতায় কবি যে আহ্বান করেছেন, তা উদ্দীপকে প্রতিফলিত নতুন জ্ঞানের সন্ধানের সঙ্গে সম্পর্কিত।
ঘ.
- উদ্দীপকের মূলভাব জীবন-সঙ্গীত কবিতার সংকল্প সাধন করার অনুপ্রেরণাদানের বিষয়টির সঙ্গে একসূত্রে গাঁথা।- মন্তব্যটি যথার্থ ।
- আমাদের জীবন স্বপ্নের মতাে অলীক নয়। তাই মিছে মায়ায় জীবনকে জড়িয়ে আশাহত হওয়া উচিত নয়। সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলার জন্য আমাদের সবসময় প্রস্তুত থাকতে হয়। না হলে কালের আবর্তে আমাদের মূল্যবান জীবন অতি তুচ্ছভাবে হারিয়ে যায়। এভাবে হারিয়ে যাওয়া জীবনের উদ্দেশ্য নয়। অতি সুখের আশায় দুঃখ না বাড়িয়ে কর্মগুণে জীবনকে সার্থক করে তুলতে হয়।
- ' জীবন-সঙ্গীত ' কবিতায় কবি মানুষকে এ পৃথিবীতে সাহসী যােদ্ধার মতাে সংগ্রাম করে বেচে থাকতে বলে। ব্যক্তিদের পথ অনুসরণ করে বরণীয় হতে বলেছেন। আর এজন্য সঠিক সংকল্প করে তা সফল করার জন্য প্রাণপণ চেষ্টা করতে বলেছেন। উদ্দীপকেও এই চেষ্টার দিকটি প্রতিফলিত হয়েছে। এখানে পৃথিবীতে যে জ্ঞানের বিস্ফোরণ ঘটে চলেছে তার সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলার কথা বলা হয়েছে এবং নতুন নতুন জ্ঞান ও তার কর্মকুশলতা আয়ত্ত করতে চেষ্টা চালাতে বলা হয়েছে।
- জীবন-সঙ্গীত কবিতায় কবি ক্ষণস্থায়ী মানবজীবনের কিছু ব্যর্থতা ও সীমাবদ্ধতার কথা বলেছেন। সেগুলােকে মনে রেখেই জীবনপথে অগ্রসর হতে হবে এবং মানবকল্যাণে আত্মনিয়ােগ করতে হবে। তাই জীবনকে বিষাদগ্রস্ত করে হতাশায় মুড়িয়ে রাখলে। জীবনের প্রকৃত উদ্দেশ্য সফল হয় না । উদ্দীপকেও জীবনের উদ্দেশ্য সাধনের জন্য অগ্রসর জীবনের জন্য নতুন জ্ঞানের সঙ্গে পরিচয় লাভের কথা বলা হয়েছে। এই দিক থেকে প্রশ্নোক্ত মন্তব্যটি যথার্থ।
Postar um comentário