আমার পরিচয় কবিতার সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর - ২০২২.Helped school.
আমার পরিচয় কবিতার সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর - ২০২২
আমার পরিচয় কবিতার গুরুত্বপূর্ণ সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর যেসব পড়লে ও দেখলে তোমাদের খুবই উপকার হবে। এই সকল সৃজনশীল প্রশ্ন সকল বোর্ড, অনুধাবন, প্রয়োগ, উচ্চতার দক্ষতা মূলক প্রশ্ন থেকে নেওয়া হয়েছে। আসা করি এই সকল সৃজনশীল প্রশ্ন পড়লে তোমাদের S.S.C পরীক্ষার আমার পরিচয় কবিতা বিষয়ের জন্য খুব উপকারী হবে।
আরও পড়ুন ঃ
আমার পরিচয় কবিতার বহুনির্বাচনি প্রশ্ন ও উত্তর - ২০২২
সৃজনশীল প্রশ্ন - ০১
গাহি সাম্যের গান_
মানুষের চেয়ে বড় কিছু নাই, নহে কিছু মহীয়ান।
নাহ দেশ-কাল-পাত্রের ভেদ- অভেদ ধর্মজাতি
সব দেশে সব কালে ঘরে ঘরে তিনি মানুষের জ্ঞাতি।
ক. চর্যাপদ কে আবিষ্কার করেন?
খ. কবি বারাে ভূঁইয়াদের প্রসঙ্গ এনেছেন কেন?
গ. উদ্দীপকটি আমার পরিচয়' কবিতাটির কোন দিকের প্রতিনিধিত্ব করে? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. উদ্দীপকে আমার পরিচয় কবিতার আংশিক ভাব ফুটে উঠেছে— উক্তিটির যথার্থতা বিচার কর ।
সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর ০১
ক.
হরপ্রসাদ শাস্ত্রী চর্যাপদ আবিষ্কার করেন।
খ.
- বাঙালির সুদীর্ঘ কালের ঐতিহ্য তুলে ধরার জন্য কবি বারাে ভূঁইয়াদের প্রসঙ্গ এনেছেন।
- আমার পরিচয় কবিতায় কবি ইতিহাসের বিভিন্ন অধ্যায় ও সাংস্কৃতিক রাজনৈতিক ঐতিহ্যের নিরিখে বাঙালির আত্মপরিচয় নির্ণয়। করেছেন। ঐতিহাসিকতার দিক থেকে দেখা যায়, জমিদার ঈশা খাঁর নেতৃত্বে যে কয়জন স্বাধীন জমিদার ঐক্যবদ্ধ হয়ে মােগল শক্তির। বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ান তারাই বারাে ভূইয়া' নামে পরিচিত। তাঁদের মধ্যে উল্লেখযােগ্য ঈশা খাঁ, চাঁদ রায়, কেদার রায়, প্রতাপাদিত্য, লক্ষ্মণ মাণিক্য প্রমুখ। সংগ্রামী মনােভাব ও বীরত্বের জন্য তাঁরা ইতিহাসে বিখ্যাত হয়ে আছেন। বাঙালির এই স্বাধীনচেতা মনােভাব, সাহসী চেতনা তুলে ধরতে গিয়ে কবি ‘আমার পরিচয় কবিতায় তাদের প্রসঙ্গ এনেছেন ।
গ.
- উদ্দীপকটি ‘আমার পরিচয়' কবিতাটির মানবধর্মের প্রতিনিধিত্ব করে ।
- বাংলা অভিন্ন সংস্কৃতি, ধর্মনিরপেক্ষ, অসাম্প্রদায়িক চেতনায় আবদ্ধ । বাংলার ভূখণ্ডে নানা জাতি-ধর্মের লােক বাস করে। কিন্তু জাতিধর্মের। পার্থক্য এখানকার মানুষের জীবনে কোনাে দেওয়াল তৈরি করেনি। একে অন্যের সঙ্গে ভ্রাতৃত্বের বন্ধনে বেঁধে জীবন অতিবাহিত করে।
- উদ্দীপকের কবিতাংশে কবি সাম্যের জয়গান গেয়েছেন । এখানে মানুষের মাঝে মানুষের যে পার্থক্য তার উল্লেখ করেছেন। কবির মতে মানুষের মাঝে কোনাে পার্থক্য থাকা উচিত নয়। মানুষের ধর্ম, বর্ণ, দেশ যাই হােক না কেন সেগুলাের মেকি বৈষম্যের অবসান ঘটিয়ে কবি। মানবতার দিকটির প্রতি সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন। আমার পরিচয় কবিতায়ও নিজের পরিচয় দিতে গিয়ে কবি চর্যাপদ জয়নুল ক্ষুদিরাম ও তিতুমীরের কথা স্মরণ করেছেন। সেই সঙ্গে বাঙালির বীজমন্ত্র সবার উপরে মানুষ সত্য, তাহার উপরে নাই' কথাটি উল্লেখ । করে মানবতার বাণীকে সামনে এনেছেন। কবিতার এই মানবধর্মের দিকটিই উদ্দীপককে প্রতিনিধিত্ব করে।
ঘ.
- উদ্দীপকে আমার পরিচয়' কবিতার আংশিক ভাব ফুটে উঠেছে- উক্তিটি যথার্থ।
- বাঙালি ধর্মনিরপেক্ষ অসাম্প্রদায়িক মানসিকতার বৈশিষ্ট্যে ঐতিহ্যমণ্ডিত। কারণ বাংলা ভূখণ্ডে নানা সম্প্রদায়ের অসংখ্য লােক বাস। করে। তাদের ভাষা, ধর্ম, সংস্কৃতি, ইতিহাস-ঐতিহ্য, শিল্প-সাহিত্য ইত্যাদি তাদেরকে একটি স্বতন্ত্র জাতি গঠনে উদ্বুদ্ধ করেছে।
- ‘আমার পরিচয়' কবিতায় কবি আত্মপরিচয় তুলে ধরতে গিয়ে এদেশের ইতিহাস, ঐতিহ্য, ভাষা, সংস্কৃতি, মানুষ ও মানবিকতার কথা বলেছেন। কবির বাংলায় জন্ম এবং তার ভাষাও বাংলা। তাঁর কবিতায় বাঙালির বিবর্তনের ইতিহাস প্রকাশিত হয়েছে। বাঙালি জাতি দীর্ঘ আন্দোলন-সংগ্রামের পথ পাড়ি দিয়ে আজকের জায়গায় এসে পৌঁছেছে। চর্যাপদ, পাল শাসন, চাঁদ সওদাগর, বাউল-ফকির, মীরদের মধ্য দিয়ে তাদের এই পূর্ণতার দিক উদ্দীপকের নেই। আর এ পর্যন্ত আসার ক্ষেত্রে বাঙালির বীজমন্ত্র— সবার উপরে মানুষ সত্য, তাহার উপরে নাই' বিষয়টি কাজ করেছে। উদ্দীপকেও মানুষের জয়গান গাওয়া হয়েছে। মানুষে মানুষে কোনাে ভেদ নেই। সবাই সমান। এদিক থেকে উদ্দীপক ও আমার পরিচয়' কবিতাটি সাদৃশ্যপূর্ণ।
- আমার পরিচয় কবিতায় কবি বাঙালির আত্মপরিচয় নির্ণয়ে ইতিহাস-ঐতিহ্যের যেসব ঘটনা ও চরিত্রের প্রতি ইঙ্গিত করেছেন তা উদ্দীপকে নেই। উদ্দীপকে কেবল সাম্যবাদের দিকটি প্রকাশ পেয়েছে। উদ্দীপকে উল্লিখিত সাম্যবাদের বিষয়টি ছাড়াও আমার পরিচয়' কবিতায় নানা বিলা কষ্টে উঠেছে। এই বিবেচনায় উদ্দীপকে ‘আমার পরিচয়’ কবিতার আংশিক ভাব ফুটে উঠেছে। সুতরাং মন্তব্যটি যথার্থ।
সৃজনশীল প্রশ্ন ০২
হিন্দু মুসলিম বৌদ্ধ খ্রিষ্টান
অবান্তর আজ এ প্রশ্ন
আমরা সবাই বাঙালি
বাংলা মায়ের সন্তান
এ কথাই অগ্রগণ্য।
আমাদের পরিচয় ধর্মে নয়
কর্মে পরিচয় পাই _
আমরা সবাই মানুষ
এটাই আমাদের শেষ পরিচয়।
ক. বাংলাদেশের শিল্পকলা আন্দোলনের পথিকৃৎ কে? খ. “আমি যে এসেছি জয়বাংলার বজ্রকণ্ঠ থেকে” বলতে কী বােঝানাে হয়েছে?
গ. উদ্দীপকটি ‘আমার পরিচয় কবিতার কোনে দিকটির সাথে সম্পর্কযুক্ত? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. “আমরা সবাই মানুষ এটাই আমাদের শেষ পরিচয়।”– পঙক্তিটি আমার পরিচয় কবিতার আলােকে বিশ্লেষণ কর।
সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর ০২
ক.
বাংলাদেশে শিল্পকলা আন্দোলনের পথিকৃৎ হলেন শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন।
খ.
- “আমি যে এসেছি জয়বাংলার বজ্রকণ্ঠ থেকে” বলতে স্বাধীনতা অর্জনে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বজ্রকণ্ঠের প্রেরণাকে বােঝানাে হয়েছে।
- বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বজ্রকণ্ঠে উচ্চারিত জয় বাংলা’ ধ্বনি একদিন বাংলার মানুষের প্রাণে সাড়া জাগিয়েছিল । তাদের স্বাধীনতার আকঙক্ষাকে জাগিয়ে তুলে বুকে অসীম সাহস এনে দিয়েছিল । মহান নেতার অনুপ্রেরণায় বাঙালি জাতি ঐক্যবদ্ধ হয়ে প্রতিরােধ গড়ে তােলে। যার যা কিছু আছে তা নিয়েই মহান মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে এবং বাংলাদেশকে স্বাধীন করে। বাঙালির স্বাধীন। সত্তা প্রতিষ্ঠায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ‘জয় বাংলা' স্লোগানের শক্তি সঞ্চারের বিষয়টিই প্রশ্নোক্ত লাইনটিতে ফুটে উঠেছে।
গ.
- 'আমার পরিচয়' কবিতায় বাঙালির যে অসাম্প্রদায়িক চেতনার পরিচয় পাওয়া যায় তার সঙ্গে উদ্দীপকটি সম্পর্কযুক্ত।
- জাতি বর্ণ বা ধর্মের কারণে সৃষ্ট কৃত্রিম ভেদাভেদ সমাজকে খণ্ড-বিখণ্ড করে, এর ফলে মানুষ ঐক্যবদ্ধ হতে পারে না। কিন্ত। বাংলাদেশে বিভিন্ন জাতি, ধর্ম, বর্ণের মানুষ বাস করলেও তারা অসাম্প্রদায়িক চেতনার ধারক। তাই যুগ যুগ ধরে তারা মিলেমিশে। বসবাস করে আসছে, ঐক্যবদ্ধ হয়ে বিপদকে মােকাবিলা করেছে, সংগ্রাম করেছে।
- আমার পরিচয় কবিতার মূলভাবে বাঙালির এই অসাম্প্রদায়িক চেতনাই মূর্ত হয়ে উঠেছে। বিভিন্ন ধর্মের মানুষ একে অপরকে ভালােবেসে এক। সন্ত বিপদে সংগ্রামে, সুখে-দুঃখে, যার পরিচয় ফুটে উঠেছে বাংলা সাহিত্যে। বাঙালি পরিচয়েই তারা যুদ্ধ করেছে অপশক্তির বিরদ্ধে, স্বাধীন। দ্য উশকে। উদ্দীপকেও বলা হয়েছে যে, বাঙালির পরিচয় ধর্মে নয়, কর্মে। কবি এখানে বাংলার মানুষের অসাম্প্রদায়িক চেতনার প্রকাশ । বাঙালি অসাম্প্রদয়িক চেতনাকে ধারণ করে। তারা মানুষ পরিচয়কেই বড় করে দেখে। এই চেতনায় বিশ্বাস করেই তারা ঐক্যবদ্ধ। আমার পরিচয় কবিতায় এই চেতনায় বাঙালির একাত্ম হওয়ার দিক থেকে উদ্দীপকটি এর সাথে সম্পর্কযুক্ত।
ঘ.
- “আমরা সবাই মানুষ/এটাই আমাদের শেষ পরিচয়।”- আমার পরিচয় কবিতার আলােকে পঙুক্তিটি গভীর তাৎপর্যমণ্ডিত।
- ধর্ম, বর্ণ বা জাতিগত বিভেদ মানুষের সত্যিকার পরিচয় খর্ব করে। তাই এগুলাে কখনাে মানুষের প্রকৃত সত্তার পরিচায়ক হতে পারে । এই সংকীর্ণতার গণ্ডিতে বাঙালি আবদ্ধ নয়, সবকিছুর ঊর্ধ্বে সে তার মানুষ পরিচয়েই বিশ্বাসী।
- আমার পরিচয় কবিতায় কবি বাঙালি জাতিসত্তার অসাম্প্রদায়িক চেতনা ও জীবনবােধকে নির্দেশ করেছেন। একই সঙ্গে এদেশে যে বিভিন্ন ধর্মের চর্চা। হয়েছে বিভিন্ন ধর্মের মানুষের বিশ্বাস ও মতাদর্শ বিস্তার লাভ করেছে সে কথাও বলা হয়েছে। কিন্তু এ নিয়ে বাঙালির মাঝে কোনাে দ্বন্দ্ব-বিভেদ তৈরি হয়নি। কারণ তারা বিশ্বাস করে মানবতাই তাদের প্রকৃত সত্তা। উদ্দীপকের কবিতাংশেও এই মনােভাব প্রকাশিত হয়েছে। কে কোন ধর্মে বিশ্বাসী সেসব নিশ্চিহ্ন হয়েছে জাতির সংকটের মুহুর্তে । সবাই এক মানুষ পরিচয়েই বিশ্বাসী, বাঙালি মায়ের সন্তান হতে পারাটাই তাদের কাছে অত্যন্ত আনন্দ ও গর্বের।
- ধর্মবিশ্বাস যদি অন্ধ হয় তবে তা মানুষের জন্য ক্ষতিকর। কারণ এই অন্ধবিশ্বাসীরাই বিভেদ তৈরি করে মানুষে মানুষে, জাতিতে জাতিতে। বাঙালি তার হৃদয়ের মহত্ত্বে এই সংকীণতাকে অতিক্রম করেছে, তারা বিশ্বাস করে যে তারা মানুষ এবং এটিই তাদের। আসল পরিচয়। প্রশ্নোক্ত বাক্যে এবং আমার পরিচয় কবিতায় এ ভাবটি প্রাধান্য পেয়েছে ।
Postar um comentário