-->

মানুষ কবিতা - কাজী নজরুল ইসলাম. Helped school.

 আমরা এই পোস্টের মাধ্যমে মানুষ কবিতার প্রত্যেকটি বিষয় তুলে  করব যাতে তোমাদের বুঝতে সুবিধা হয়। আমাদের ওয়েবসাইটে নবম - দশম শ্রেণীর সকল কবিতার  দেওয়া আছে। তোমরা চাইলে home গিয়ে সার্চ করে দেখতে পারো।


মানুষ কবিতা - কাজী নজরুল ইসলাম.  Helped school.

আরও পড়ুন ঃ 

কপোতাক্ষ নদ কবিতা
 


মানুষ 

কাজী নজরুল ইসলাম


 গাহি সাম্যের গান - 

মানুষের চেয়ে বড় কিছু নাই, নহে কিছু মহীয়ান

নাই দেশ-কাল-পাত্রের ভেদ, অভেদ ধর্মজাতি,

সব দেশে সব কালে ঘরে-ঘরে তিনি মানুষের জ্ঞাতি।


 ‘পূজারী, দুয়ার খােলাে,

ক্ষুধার ঠাকুর দাঁড়ায়ে দুয়ারে পূজার সময় হলাে!

 স্বপন দেখিয়া আকুল পূজারী খুলিল ভজনালয়,

 দেবতার বরে আজ রাজা-টাজা হয়ে যাবে নিশ্চয়।


 জীর্ণ-বস্ত্র শীর্ণ-গাত্র, ক্ষুধায় কন্ঠ ক্ষীণ -

ডাকিল পান্থ, দ্বার খােলাে বাবা, খাইনি তাে সাত দিন!

 সহসা বন্ধ হলাে মন্দির, ভুখারি ফিরিয়া চলে,

 তিমিররাত্রি, পথ জুড়ে তার ক্ষুধার মানিক জ্বলে !


 ভুখারি ফুকারি' কয়, 

“ঐ মন্দির পূজারীর, হায় দেবতা, তোমার নয়!”

 মসজিদে কাল শিরনি আছিল, - অঢেল গোস্ত রুটি

 বাঁচিয়া গিয়াছে, মােল্লা সাহেব হেসে তাই কুটি কুটি,

 এমন সময় এলো মুসাফির পায়ে আজারির চিন

বলে, “বাবা, আমি ভুখা ফাকা আছি আজ নিয়ে সাত দিন!'


তেরিয়া হইয়া হাঁকিল মােল্লা-'ভ্যালা হলাে দেখি লেঠা,

 ভুখা আছ মর গাে-ভাগাড়ে গিয়ে! নমাজ পড়িস বেটা?

 ভুখারি কহিল, 'না বাবা!' মােল্লা হাঁকিল-“তা হলে শালা

সোজা পথ দেখ! গোস্ত-রুটি নিয়া মসজিদে দিল তালা।


 ভুখারি ফিরিয়া চলে,

চলিতে চলিতে বলে -

 ' আশিটা বছর কেটে গেল, আমি ডাকিনি তােমায় কভু,

 আমার ক্ষুধার অন্ন তা বলে বন্ধ করনি প্রভু।

তব মসজিদ মন্দিরে প্রভু নাই মানুষের দাবি।


মােল্লা পুরুত লাগায়েছে তার সকল দুয়ারে চাবি।

কোথা চেঙ্গিস, গজনি মামুন, কোথায় কালাপাহাড়?

ভেদ্রে ফেল ঐ ভজনালয়ের যত তালা-দেওয়া দ্বার!

খােদার ঘরে কে কপট লাগায়, কে দেয় সেখানে তালা?


সব দ্বার এর খােলা রবে, চালা হাতুড়ি শাবল চালা!

হায় রে ভজনালয়,

তােমার মিনারে চড়িয়া ভণ্ড পাহে স্বার্থের জয়!