তোমাকে পাওয়ার জন্য হে স্বাধীনতা কবিতার সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর. Helped school.
তোমাকে পাওয়ার জন্য হে স্বাধীনতা কবিতার সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর - ২০২২
তোমাকে পাওয়ার জন্য হে স্বাধীনতা কবিতার গুরুত্বপূর্ণ সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর যেসব পড়লে ও দেখলে তোমাদের খুবই উপকার হবে। এই সকল সৃজনশীল প্রশ্ন সকল বোর্ড, অনুধাবন, প্রয়োগ, উচ্চতার দক্ষতা মূলক প্রশ্ন থেকে নেওয়া হয়েছে। আসা করি এই সকল সৃজনশীল প্রশ্ন পড়লে তোমাদের S.S.C পরীক্ষার তোমাকে পাওয়ার জন্য হে স্বাধীনতা কবিতার কবিতা বিষয়ের জন্য খুব উপকারী হবে।
আরও পড়ুন ঃ
তোমাকে পাওয়ার জন্য হে স্বাধীনতা কবিতার বহুনির্বাচনি প্রশ্ন ও উত্তর - ২০২২
সৃজনশীল প্রশ্ন ০১
১১ অগোবর, সােমবার, ১৯৭১। হঠাৎ করে ভারী অস্ত্র ও গােলা-বারুদ নিয়ে গাজীপরা গ্রামে প্রবেশ করে একদল মিলিটারি । গ্রামে ঢুকে তারা প্রথমে বাজার ও দোকানপাট পড়িয়ে দেয়। নির্বিচারে গুলি চালায় সাধারণ মানুষের ওপর। গুলি খেয়ে মুখ থুবড়ে পড়ে যায় অনেক মানুষ। অনেকে গরতর আহত হয়। আতঙ্কে জীবন বাঁচাবার জন্য কেউ কেউ পালাবার চেষ্টা করে। অনেককে তারা ধরে নিয়ে যায়। ক্যাম্পে। সে এক বিভীষিকাময় পরিস্থিতি, যা এখনও সেই গ্রামের মানুষকে তাড়া করে বেড়ায় ।
ক. শামসুর রাহমানের কবিতায় সার্থকভাবে প্রকাশ পেয়েছে কী?
খ. ‘সাকিনা বিবির কপাল ভাঙল’ বলতে কী বােঝানাে হয়েছে?
গ. উদ্দীপকে ‘তােমাকে পাওয়ার জন্যে, হে স্বাধীনতা’ কবিতার যে দিকটি ফুটে উঠেছে তা আলােচনা কর । . ঘ. উদ্দীপকটি ‘তােমাকে পাওয়ার জন্যে, হে স্বাধীনতা’ কবিতার খণ্ডচিত্র মাত্র।”- মন্তব্যটি বিশ্লেষণ কর।
সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর ০১
ক.
শামসুর রাহমানের কবিতায় মধ্যবিত্ত নাগরিক জীবনের প্রত্যাশা, হতাশা, বিচ্ছিন্নতা, বৈরাগ্য ও সংগ্রাম সার্থকভাবে প্রকাশ পেয়েছে।
খ.
- সাকিনা বিবির কপাল ভাঙল বলতে পাকিস্তানি হানাদারদের নির্মম নির্যাতনের শিকার হয়ে সম্ভম হারানাে সাকিনা বিবির জীবনে মহা। দুর্যোগ নেমে আসাকে বােঝানাে হয়েছে।
- ‘তােমাকে পাওয়ার জন্যে, হে স্বাধীনতা' কবিতায় কবি বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে এদেশের সর্বস্তরের মানুষের অংশগ্রহণ ও আত্মত্যাগের মহিমা তলে ধরেছেন। এ কবিতায় পাকিস্তানি হানাদারদের নির্মম অত্যাচার-নির্যাতন, হত্যা ও ধ্বংসযজ্ঞের বিষয় প্রতিফলিত হয়েছে। তাদের সেই অত্যাচারের শিকার হয়েছে সাকিনা বিবি। স্বাধীনতা পাওয়ার জন্য সাকিনা বিবির মতাে গ্রামীণ নারীর সহায়-সম্বল-সম বিসর্জিত হয়েছে। কবি এখানে সাকিনা বিবিকে স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় নির্যাতিত নারীর প্রতিনিধি হিসেবে উপস্থাপন করেছেন।
গ.
- উদ্দীপকে তােমাকে পাওয়ার জন্যে, হে স্বাধীনতা’ কবিতার পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর নির্মম অত্যাচার ও নির্যাতনের দিকটি ফুটে উঠেছে।
- ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী এদেশের নিরীহ মানুষের ওপর নির্মম অত্যাচার ও নির্যাতন চালায়। তারা। এদেশের নিরীহ মানুষকে নির্মমভাবে হত্যা করে। তারা স্বাধীনতার স্বপ্নকে বাঙালির মন থেকে চিরতরে মুছে দিতে চেয়েছিল।
- উদ্দীপকে মুক্তিযুদ্ধের সময় এদেশের নিরীহ মানুষের ওপর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর নির্মম অত্যাচারের দিকটি প্রতিফলিত হয়েছে। এখানে ১৯৭১ সালের ১১ অক্টোবর ভারী অস্ত্র ও গােলা-বারুদ নিয়ে গাজীপুরা গ্রামে একদল মিলিটারির হত্যাযজ্ঞ চালানাের কথা বলা। হয়েছে। তাদের অত্যাচার থেকে গ্রাম ছেড়ে পালাতে গিয়ে অনেকেই গুলিবিদ্ধ হয়। উদ্দীপকের এই চিত্রটি ‘তােমাকে পাওয়ার জন্যে, হে। স্বাধীনতা কবিতায় প্রতিফলিত জলপাই রঙের ট্যাঙ্ক নিয়ে এদেশের মানুষের ওপর দানবীয় অত্যাচার চালানাের সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ। কবি এখানে সাকিনা বিবির কপাল ভাঙার, হরিদাসীর সিথির সিঁদুর মুছে যাওয়া, ভগ্নস্তুপে দাঁড়িয়ে কুকুরের আর্তনাদ, পিতা-মাতার লাশের উপর অবুঝ শিশুর হামাগুড়ি দেওয়া, সগীর আলী, কেষ্ট দাস, মতলব মিয়া, রুস্তম শেখ প্রমুখের মৃত্যুর কথা বলে পাকিস্তানি হানাদারদের নির্মম অত্যাচারের বর্ণনা দিয়েছেন। এভাবে উদ্দীপকটি ‘তােমাকে পাওয়ার জন্যে, হে স্বাধীনতা’ কবিতার সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ।
ঘ.
- “উদ্দীপকটি ‘তােমাকে পাওয়ার জন্যে, হে স্বাধীনতা’ কবিতার খণ্ডচিত্র মাত্র।”- মন্তব্যটি যথার্থ।
- পাকিস্তানি শাসকগােষ্ঠী বাঙালির স্বাধীনতার আকাঙ্ক্ষাকে চিরতরে মুছে দিতে চেয়েছিল। সেই লক্ষ্যকে সামনে রেখে তারা এদেশের মানুষের ওপর নির্মম অত্যাচার চালায়। বাঙালিরা মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে তাদের রুখে দিয়ে স্বাধীনতা অর্জন করে।
- উদ্দীপকে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর কিছু সদস্যের আক্রমণে গাজীপুরা গ্রামের মানুষের জীবনে নির্মমতা নেমে আসার দিকটি তলে। ধরা হয়েছে। সেই হত্যাযজ্ঞের কথা ঐ গ্রামের বেঁচে যাওয়া মানুষেরা আজও ভুলতে পারে না। এই বিষয়টি তােমাকে পাওয়ার জন্যে, হে স্বাধীনতা’ কবিতার একটি বিশেষ দিককে নির্দেশ করে। এ কবিতায় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর অত্যাচার- নিং উদ্দীপকের সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ হয়ে উঠেছে। এই বিষয়টি ছাড়াও কবিতায় স্বাধীনতা অর্জনের জন্য এদেশের সর্বস্তরের মানুষের আত্মত্যাগের বিষয়, নারী নির্যাতন, শিশু ও বৃদ্ধের প্রতি নির্মমতার দিক প্রতিফলিত হয়েছে, যা উদ্দীপকে নেই।
- 'তােমাকে পাওয়ার জন্যে, হে স্বাধীনতা' কবিতায় উদ্দীপকের বিষয় ছাড়াও স্বাধীনতার জন্য অধীর প্রতীক্ষা তরণ যােদ্ধার ঘরে বেড়ানাে, পৃথিবীর এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে জ্বলন্ত ঘােষণা হয়ে, দামামা বাজিয়ে স্বাধীনতার আগমনের স্বপ্ন ইত্যাদি রয়েছে। এসব দিক বিচারে তাই বলা যায়, প্রশ্নোক্ত মন্তব্যটি যথার্থ।
সৃজনশীল প্রশ্ন ০২
পাকিস্তান রাষ্ট্রের সৃষ্টিতে বাঙালির অবদান অপরিসীম। ব্রিটিশ ভারত থেকে স্বাধীনতা প্রাপ্তির পর ২৪ বছর ধরে অকৃতজ্ঞ পাকিস্তানি শাসকবর্গ আমাদের নিষ্ঠুরভাবে শাসন করেছে শােষণ করেছে। পরিশেষে শক্তি দিয়ে, সংগ্রাম করে অগণিত শহিদদের তপ্ত খুনে অকিত হয়েছে লাল সবুজের পতাকা।
ক. অধীর আগ্রহে সবাই বসে আছে কিসের প্রতীক্ষায়?
খ, জলপাই রঙের ট্যাঙ্ককে দানবের সাথে তুলনা করা হয়েছে কেন?
গ. তােমাকে পাওয়ার জন্যে, হে স্বাধীনতা’ কবিতার যে ভাবটি উদ্দীপকে ফুটে উঠেছে তা ব্যাখ্যা কর।
ঘ, উদ্দীপকটি “তােমাকে পাওয়ার জন্যে, হে স্বাধীনতা’ কবিতার আংশিক প্রতিফলন মাত্র- মন্তব্যটির যথার্থতা যাচাই কর।
সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর ০২
ক.
অধীর আগ্রহে সবাই বসে আছে স্বাধীনতার প্রতীক্ষায়।
খ.
- শত্রুরা জলপাই রঙের ট্যাঙ্ক দিয়ে এদেশে অনেক হত্যা ও ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে বলে ট্যাঙ্ককে দানবের সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে।
- ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানি সেনারা এদেশে অমানবিক হত্যাকাণ্ড চালায়। তারা হত্যাকাণ্ডের তৎপরতা বৃদ্ধি করার জন্য। ট্যাঙ্ক নিয়ে শহরের ভেতর ঢুকে পড়ে। আর ট্যাঙ্কের আঘাতে জনজীবন অস্থির হয়ে ওঠে। বাংলার সাধারণ মানুষ এমন কোনােকিছুর জন্য কখনই প্রস্তুত ছিল না বলে তাদের কাছে এই নারকীয়তা যেন দানবের কথা মনে করিয়ে দেয়। বাঙালির কাছে এই নশংসতা দানবের নৃশংসতা থেকে কোনাে অংশে কম নয়। কবি পাকিস্তানিদের নির্মম ও নির্বিচার হত্যাকাণ্ড এবং নিষ্ঠুরতা প্রকাশ করতে জলপাই রঙের ট্যাঙ্ককে দানবের সঙ্গে তুলনা করেছেন।
গ.
- তােমাকে পাওয়ার জন্যে, হে স্বাধীনতা' কবিতার স্বাধীনতার চেতনার ভাবটি উদ্দীপকে ফুটে উঠেছে।
- স্বাধীনতা মানুষের জন্মগত অধিকার । স্বাধীনতা ছাড়া কোনাে জাতিই নিজের অস্তিত্ব বেশিদিন ধরে রাখতে পারে না। পরাধীন হয়ে জীবনযাপন করতে করতে মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে শােষণ-বঞ্চনার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ায়। বাঙালি জাতিও পাকিস্তানি শাসকগােষ্ঠীর অত্যাচার-অনাচারের বিরুদ্ধে রুখে দাড়িয়ে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে বিজয় ছিনিয়ে আনে।
- উদ্দীপকে পাকিস্তান রাষ্ট্রের স্বাধীনতা সম্পর্কে বাঙালির অবদান ফুটে উঠেছে। এখানে পাকিস্তানের নির্মমতা এবং অন্যায়-অত্যাচারের বিরুদ্ধে। বাঙালিদের যুদ্ধজয়ের কথা বলা হয়েছে। তােমাকে পাওয়ার জন্যে, হে স্বাধীনতা’ কবিতায় কবি বাংলাদেশের স্বাধীনতাকামী মানুষের কথা তুলে ধরেছেন। কবিতায় বাঙালির স্বাধীনতা যুদ্ধের সংগ্রাম, অবদান এবং পাকিস্তানিদের নৃশংসতার দিক প্রতিফলিত হয়েছে। কবিতার মতাে উদ্দীপকেও স্বাধীনতার চেতনার দিকটি প্রকাশ পেয়েছে। এভাবে কবিতার স্বাধীনতা চেতনার ভাবটি উদ্দীপকে ফুটে উঠেছে।
ঘ.
- উদ্দীপকটি ‘তােমাকে পাওয়ার জন্যে, হে স্বাধীনতা' কবিতার আংশিক প্রতিফলন মাত্র- মন্তব্যটি যথার্থ।
- ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি হানাদারদের বিরুদ্ধে বাঙালি জাতি সর্বশক্তি নিয়ে রুখে দাঁড়ায়। অবশেষে এক রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীনতা অর্জন করে । এই স্বাধীনতাকে ছিনিয়ে আনতে এ দেশের অসংখ্য মানুষ জীবন দিয়েছেন। আমাদের দেশের স্বাধীনতা আমাদের অহংকার, আমাদের প্রেরণা।
- উদ্দীপকে পাকিস্তান রাষ্ট্র সৃষ্টির বিষয়ে বাঙালির অবদানের দিকটি প্রাধান্য পেয়েছে। বাঙালির ওপর পাকিস্তানিদের বৈষম্যমূলক। আচরণ এবং পরবর্তীতে মুক্তিযুদ্ধে তাদেরকে পরাজিত করে স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার দিকটিও ফুটে উঠেছে উদ্দীপকে। তােমাকে পাওয়ার জন্যে, হে স্বাধীনতা' কবিতায় স্বাধীনতাকে পাওয়ার জন্য বাঙালিদের অদম্য সাহসিকতা ও আকাঙ্ক্ষা প্রকাশিত হয়েছে। সেখানে সর্বস্তরের মানুষের মনের আতঙ্ক ও আর্তনাদ স্থান পেয়েছে। কাঙ্ক্ষিত স্বাধীনতার জন্য বাঙালিকে কত রক্তমূল্য দিতে । হয়েছে, সেটাও কবিতায় তুলে ধরা হয়েছে। এছাড়া কবিতায় স্বাধীনতার জন্য সবার অধীর অপেক্ষার কথাও বলা হয়েছে।
- উদ্দীপকে পাকিস্তানিদের প্রতি বাঙালির বিরূপ মনােভাব এবং তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ও জয়ের বিষয় উঠে এসেছে। কিন্তু কবিতায়। স্বাধীনতার কামনা থেকে শুরু করে মুক্তিযুদ্ধ জয় এবং সবার স্বার্থত্যাগের দিক প্রকাশ পেয়েছে। কবিতায় মুক্তিযুদ্ধের সার্বিক দিক প্রকাশিত হয়েছে, যা উদ্দীপকে অনুপস্থিত। তাই বলা যায়, উদ্দীপকটি কবিতার আংশিক প্রতিফলন।
Postar um comentário