-->

বিজয় দিবস রচনা. Helped school

4 minute read

বিজয় দিবস রচনা


বিজয় দিবস রচনা.  Helped school

 আরও পড়ুন ঃ 

স্বাধীনতা দিবস রচনা। 


এই প্রবন্ধ থেকে যা আমরা শিখতে পারবো ঃ

১. ভূমিকা।।

২. সংগ্রামের ইতিহাস ।।

৩. বিজয় দিবস উদ্ যাপন।।

৪. তাৎপর্য।।

৫. উপসংহার।।


বিজয় দিবস রচনা 


ভূমিকা :

বিজয় দিবস আমাদের জাতীয় জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিন। ১৬ ডিসেম্বর ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের ভাগ্যাকাশে ভাপ হয়েছিল বিজয়-রবি। দীর্ঘ নয় মাসের সংগ্রামের সমাপ্তি ঘটেছিল এ দিনটিতে। বাংলার মাটি শত্রুমুক্ত হয়ে এক নবযুগের সূচনা করেছিল। বাঙালির জাতীয় জীবনে ১৬ ডিসেম্বর এক অবিস্মরণীয় ও গৌরবজনক দিন ।


সংগ্রামের ইতিহাস :

একসময় পুরাে ভারতবর্ষ শাসন করত ব্রিটিশ তথা ইংরেজরা। ১৯৪৭ এ উপমহাদেশে ব্রিটিশ শাসনের। অবসান ঘটে এবং ভারত ও পাকিস্তান নামে দুটি স্বাধীন রাষ্ট্রের জন্ম হয়। পাকিস্তান রাষ্ট্রের ছিল দুটি অংশ। একদিকে পূর্ব । পাকিস্তান অন্যদিকে পশ্চিম পাকিস্তান। স্বাধীনতার পরপরই পাকিস্তানের কুচক্রী শাসকগােষ্ঠী নানাভাবে পূর্ব বাংলাকে শাসন ও শােষণ করার ষড়যন্ত্র শুরু করে। রাজনীতি, চাকরি, ব্যবসায়-বাণিজ্য, অর্থ-সম্পদ, বিলি-বাটোয়ারা সব ক্ষেত্রেই তারা পূর্ব বাংলাকে ঠকাতে শুরু করে। এরই প্রেক্ষাপট ১৯৫২ সালে ভাষা আন্দোলন হয়। রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবিতে শহিদ হন সালাম, রফিক, জাব্বার, বরকতসহ আর অনেকে । এরপরই শুরু হয় বাঙালির স্বাধীকার আদায়ের আন্দোলন । 


১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে পাকিস্তানি বর্বর হানাদার বাহিনী এদেশের মানুষের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। নির্বিচারে গুলি করে মানুষ হত্যা শুরু করে। ২৫ মার্চ গভীররাতে বাঙালির অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে গ্রেফতার করা হয়। পাকিস্তানি সৈন্যদের। হাতে গ্রেফতার হওয়ার পূর্বে অর্থাৎ ২৬ মার্চ প্রথম প্রহরে বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার ঘােষণা করেন । আহ্বান করেন বাঙালি সন্তানদের মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করার জন্যে। শুরু হয় সশস্ত্র মুক্তিসংগ্রাম । দীর্ঘ নয় মাস যুদ্ধের পর আর কোনাে উপায় খুঁজে না পেয়ে হানাদার পাকবাহিনী ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর মুক্তিবাহিনী ও মিত্রবাহিনীর কাছে নিঃশর্তভাবে আত্মসমর্পণ করে।


১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বিকেল ৫টা ১ মিনিটে ঢাকায় রমনা রেসকোর্স ময়দানে বর্তমান সােহরাওয়ার্দী জেনারেল নিয়াজী পাকিস্তানের আত্মসমর্পণের দলিলে স্বাক্ষর করেন । ১৯৭১-এ ১৬ ডিসেম্বর অর্জিত হয় মুক্তিযুদ্ধের বিজয় । তাই ১৬ ডিসেম্বরকে আমরা পালন করি বিজয় দিবস হিসেবে।


বিজয় দিবস উদ্ যাপন :

প্রতিবছর ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবস উদ্যাপনের জন্য আমরা ভােরে সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুস্পস্তবক অর্পণ করে শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করি । বিজয় দিবস উপলক্ষে এ দেশের সর্বস্তরের জনগণ নানা অনুষ্ঠান আয়ােজনের মধ্য দিয়ে শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানায়। স্কুল-কলেজের ছাত্রছাত্রী নানা রকম অনুষ্ঠানের আয়ােজন করে। এ দিবস উপলক্ষে সরকারি ও বেসরকারিভাবে আলােচনা সভা, কুচকাওয়াজ, শােভাযাত্রা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ইত্যাদির আয়ােজন করা হয়। তাছাড়া মসজিদ-মন্দির-গির্জায় জাতির অগ্রগতি ও সমৃদ্ধি কামনা করে বিশেষ প্রার্থনা করা হয়। এই দিনের অনুষ্ঠানমালা আমাদের স্বাধীনতার চেতনাকে শাণিত ও উজ্জীবিত করে।


তাৎপর্য :

বিজয় দিবস আমাদের জয়দীপ্ত গর্বের নিদর্শন। বাঙালি জাতি এই দিনের বিজয়ের সূত্রেই বীর জাতি হিসেবে প্রতিষ্ঠা অর্জনে সক্ষম হয়েছে । এই দিনেই বাঙালির স্বাধীন জাতি হিসেবে জয়যাত্রা শুরু। এই দিনটির মাধ্যমেই আমরা নতুনকে প্রজন্মাকে এবং বিশ্বকে বার বার স্মরণ করিয়ে দিই আমাদের মুক্তিযুদ্ধের কথা, শহিদদের কথা। মনে করিয়ে দিই বাংলাদেশ নামে একটি দেশের গৌরবােজ্জ্বল ইতিহাসের কথা, যা প্রতিটি বাঙালি তার হৃদয়ে ধারণ করে আছে । তাই বাঙালির জাতীয় জীবনে ১৬ ডিসেম্বর গভীর তাৎপর্যবহ।


উপসংহার :

১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশের বিজয় দিবস। এ দিবসটির তাৎপর্য আমাদের জাতীয় জীবনে শুভক্ষণ হিসেবে চিহ্নিত হয়ে আছে । এ দিবসের চেতনায় উজ্জীবিত হয়ে আমাদের দেশ গড়ার শপথ নিতে হবে ।


বিজয় দিবস রচনাটিতে  নতুন কিছু সংযোজন করা যায় বা বাদ দেওয়া প্রয়োজন কি/না ?  সেটা আমাদের  কমেন্ট করে জানাতে ভুলবেন না।

Premium Blogger Templates