-->

ডিজিটাল বাংলাদেশ রচনা. Helped school.

 ডিজিটাল বাংলাদেশ


ডিজিটাল বাংলাদেশ রচনা. Helped school.

আরও পড়ুন ঃ 

পরিবেশ দূষণ ও তার প্রতিকার রচনা 


প্রবন্ধ-সংকেত ঃ


[ ১.ভূমিকা ॥

২.ডিজিটাল বাংলাদেশ কী ॥

৩.শিক্ষা ক্ষেত্রে ॥

৪.চিকিৎসা ক্ষেত্রে ॥

৫.কৃষিক্ষেত্রে ॥

৬.অফিস-আদালতে॥

৭.নিরাপত্তা বিধানে ॥

৮.ক্রয়-বিক্রয়ের ক্ষেত্রে ॥

৯.যােগাযােগের ক্ষেত্রে ॥

১০.প্রকাশনার ক্ষেত্রে ॥

১১.সংবাদপত্রেরক্ষেত্রে ॥

১২.বিনােদনের ক্ষেত্রে ॥

১৩.ব্যাংক ব্যবস্থার ক্ষেত্রে ॥

১৪.অনলাইন তথ্য কেন্দ্র স্থাপন ॥

১৫.উপসংহার ।। ]


ডিজিটাল বাংলাদেশ রচনা ঃ-


ভূমিকা :

বাংলাদেশ একটি উন্নয়নশীল রাষ্ট্র। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে দেশটি স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল ১৯৭১ সালে। তারপর থেকে যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটিকে গড়ে তােলার সংগ্রাম শুরু । স্বাধীনতার ৪৪ বছর অতিবাহিত হবার পরও আমরা উন্নয়নশীলতার গণ্ডি থেকে বের হতে পারি নি। আসে নি আশানুরূপ অগ্রগতি। দেশের কর্মকাণ্ডে গতিশীলতা সৃষ্টিতে ডিজিটাল পদ্ধতি কার্যকর ভূমিকা পালন করতে পারে । ডিজিটাল পদ্ধতি বাংলাদেশের সকল কর্মকাণ্ডের সাথে ক্রমান্বয়ে প্রযুক্তির ব্যবহার সংযুক্ত হলেই গড়ে উঠবে ডিজিটাল বাংলাদেশ।


ডিজিটাল বাংলাদেশ কী :

আমাদের প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশকে ২০২০ সালের মধ্যে ডিজিটাল বাংলাদেশ’ হিসেবে গড়ে তােলার ঘােষণা দিয়েছেন। ডিজিটাল বাংলাদেশ বলতে আমরা সংক্ষেপে যা বুঝতে পারি তা হলাে সারা দেশের কর্মকাণ্ডকে আধুনিক কম্পিউটার নেটওয়ার্ক ও ইন্টারনেট সিস্টেমের মাধ্যমে অর্থাৎআধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার দিয়ে গতিশীল করে তােলা। সমগ্র বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ কর্মকাণ্ড এবং বহির্বিশ্বকে কম্পিউটার। নেটওয়ার্কের আসতে পারলে বাংলাদেশের সর্বক্ষেত্রে যে সফলতা অর্জিত হবে, তাকেই আমরা বলতে পারি ডিজিটাল বাংলাদেশ। মলম মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্বাচনী প্রচারণাকে আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশের অংশ হিসেবে গ্রহণ করতে পারি।


 শিক্ষা ক্ষেত্রে :

ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার ক্ষেত্রে প্রথমেই শিক্ষার ওপর গুরুত্ব আরােপ করা প্রয়ােজন। এ ক্ষেত্রে শিক্ষকের লেকচার বা বক্তব্য। বা ভিডিও করে প্রজেক্টরের মাধ্যমে দেওয়ালে সাদা পর্দায় তা প্রদর্শন করা যায়। এটি শিক্ষার্থীদের মনােযােগ আকর্ষণের সহজ পদ্ধতি। ইন্টারনেট। না থাকলে এ পদ্ধতিতে ঘরে বসেও শিক্ষা গ্রহণ করা যায়। নিজস্ব বই না থাকলেও, লাইব্রেরিতে যাওয়ার প্রয়ােজন হয় না – ইন্টারনেটের। ওয়েবসাইট থেকে খুজে নিয়ে তা পড়ে ফেলা যায়। এভাবে ডিজিটাল পদ্ধতি শিক্ষাক্ষেত্রে উৎকর্ষ বয়ে আনতে পারে। তবে একে সর্বজনীন করার জন্য ব্যাপক সরকারি উদ্যোগ প্রয়ােজন।


চিকিৎসা ক্ষেত্রে :

চিকিৎসা ক্ষেত্রে ব্যাপকভাবে ইন্টারনেট সংযােগ স্থাপিত হলে ডাক্তারের কাছে সরাসরি উপস্থিত না হয়েও অনলাইন। ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে ফি পরিশােধ করে ব্যবস্থাপত্র গ্রহণ করা যায়। যেকোনাে ধরনের শারীরিক সমস্যায় ঘরে বসে ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে চিকিৎসা করা যেতে পারে। বিষয়টি সরকারি উদ্যোগে সর্বজনীন হয়ে উঠলে এক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত হতে পারে ডিজিটাল বাংলাদেশ।


কৃষিক্ষেত্রে :

বৈজ্ঞানিক যন্ত্রপাতির ব্যবহার ও বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে চাষাবাদের ফলে কৃষিতে যুগান্তকারী পরিবর্তন এসেছে। বিজ্ঞানের বদৌলতে উভাবিত হয়েছে উন্নত জাতের বীজ, পরিবেশ বান্ধব সার ও উচ্চ ফলনশীল প্রজাতির শস্য। অনাবৃষ্টি থেকে রক্ষার জন্য কৃত্রিম বৃষ্টিপাতের বৈজ্ঞানিক ব্যবস্থাও উদ্ভাবিত হয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশের কৃষকসমাজ অধিকাংশ নিরক্ষর হওয়ার কারণে সবকিছুর সফল ব্যবহার করতে পারছে না। তাই কৃষকদের যথার্থ প্রশিক্ষণ দিয়ে উপযুক্ত করে তুলতে পারলে ইন্টারনেটের মাধ্যমে ওয়েভসাইট থেকে নানা বিষয় জেনে নিয়ে তা কাজে। লাগাতে পারে । তাহলে এক্ষেত্রেও ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে উঠতে পারে।


অফিস-আদালতে : 

বাংলাদেশের অধিকাংশ অফিস-আদালতে কাজের গতি অত্যন্ত মন্থর এবং সর্বক্ষেত্রে ওঁৎ পেতে আছে দুর্নীতির কালাে থাবা। “পগুলােতে সি সি ক্যামেরা স্থাপন করে ইন্টারনেটের মাধ্যমে কম্পিউটার নেটওয়ার্কের আওতায় এনে একস্থানে বসে প্রশাসনকে গতিশীল, 'মুখ ও দুর্নীতিমুক্ত করা যায়। এ ব্যবস্থা ব্যাপকভাবে চালু করা হলে কেউ আর অফিসে বসে কাজ রেখে আরামপ্রিয়-মগ্ন হবে না এবং ঘুষ দুনীর্তির সন্ধানে ব্যস্ত রাখবে না নিজেকে। তখনই কুশাসনের পরিবর্তে সুশাসন প্রতিষ্ঠিত হবে এবং গড়ে উঠবে ডিজিটাল বাংলাদেশ।


নিরাপত্তা বিধানে :

নিরাপত্তা সর্বক্ষেত্রেই একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এক্ষেত্রে সি সি ক্যামেরা স্থাপন ও ইন্টারনেটের সাথে কম্পিউটার নেটওয়ার্কের সংযােগ সাধন করে নিরাপত্তা বিধান করা সম্ভব। কেননা, দুষ্কৃতকারীরা কোনাে অঘটন ঘটিয়ে সাময়িকভাবে পালিয়ে গেলেও পরবর্তীকালে ক্যামেরার বদৌলতে ধরা পড়তে বাধ্য। নিশ্চিত হবে জাতির নিরাপত্তা। আর জাতির নিরাপত্তা নিশ্চিত হলেই গতিশীল হবে ডিজিটাল বাংলাদেশ।


ক্রয়-বিক্রয়ের ক্ষেত্রে :

ক্রয়-বিক্রয় মানুষের জীবনে একটি নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার। বিভিন্ন প্রয়ােজনীয় দ্রব্যসামগ্রী কেনার জন্য প্রতিদিনই আমাদের। হাটে বাজারে বা কোনাে শপিংমলে যেতে হয়। কম্পিউটার নেটওয়ার্কের বিস্তার ঘটানাে হলে ঘরে বসেই ক্রয়-বিক্রয় করা যাবে এবং বর্তমানে সীমিত আকারে তা হচ্ছে। প্রয়ােজনীয় জিনিসপত্র পছন্দ করা, দাম-দস্তুর করা, এবং অনলাইন ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে মূল্য পরিশােধ করে দ্রব্যসামগ্রী ঘরে বসে পেয়ে যাওয়া সবই সম্ভব। শুধু দেশেই নয়, বিদেশের সাথেও এটি কার্যকর হবে ইন্টারনেটের মাধ্যমে। এ পদ্ধতি ব্যাপকভাবে চালু হলেই ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত হবে।


যােগাযােগের ক্ষেত্রে : 

বর্তমানে কম্পিউটার নেটওয়ার্কের সাহায্যে ইন্টারনেটের মাধ্যমে যােগাযােগ ব্যবস্থার অনেককিছুই নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে। বিশেষ করে আকাশ পথ এখন কম্পিউটার দ্বারা নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। বিভিন্ন গ্রহে রকেট উৎক্ষেপণ করা হলে যােগাযােগ থাকছে কম্পিউটার। নেটওয়ার্কের সাথে। নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে সমুদ্র পথ। মুহূর্তের মধ্যে একদেশের সাথে আরেক দেশের যােগাযােগ স্থাপিত হচ্ছে ইন্টারনেটের মাধ্যমে। এ ব্যবস্থার মাধ্যমে সারা দেশকে হাতের মুঠোয় নিয়ে আসা যায়।


প্রকাশনার ক্ষেত্রে :

প্রকাশনার ক্ষেত্রে অনেক আগেই কম্পিউটার সিস্টেম চালু হয়েছে আমাদের দেশে। আগে যে বইটি ছেপে বের হতে দু মাস। সময় লাগত, বর্তমানে তা দু দিনেই সম্ভব। বাংলাদেশের কোনাে বাংলা বই বিদেশ থেকে প্রকাশ করতে চাইলে এখন আর কোনাে সমস্যাই নেই। সবকিছু ফাইনাল করে কয়েক মিনিটের মধ্যে তা নির্ধারিত দেশে পঠিয়ে দেওয়া যায় এবং সে দেশের কোনাে বই এ পদ্ধতিতে নিয়ে এসে আমাদের দেশে দ্রুত গতিতে প্রকাশ করা যায়।


সংবাদপত্রের ক্ষেত্রে :

সংবাদপত্রের ক্ষেত্রে কম্পিউটার এখন ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে। ইন্টারনেটের মাধ্যমে একটি সংবাদপত্র একই সময়ে। দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে প্রকাশিত হচ্ছে। আবার বিদেশি পত্রিকাগুলাে আমরা পড়তে পারছি ইন্টারনেটের মাধ্যমে। অনেক আগের পত্রিকাও খুজে বের করে নেওয়া যাচ্ছে ওয়েবসাইট থেকে।


বিনােদনের ক্ষেত্রে :

বিনােদনের ক্ষেত্রে কম্পিউটার নেটওয়ার্ক ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে। খেলাধুলা, সিনেমা ইত্যাদি থেকে শুরু করে নানা ধরনের আনন্দ উপভােগ করা যাচ্ছে কম্পিউটারের মাধ্যমে। খেলা যাচ্ছে নানা ধরনের গেম। ইন্টারনেটের সাহায্যে অন্য কোনাে দেশে চলমান খেলার ফলাফল মুহূর্তের মধ্যেই জানা যাচ্ছে।


ব্যাংক ব্যবস্থার ক্ষেত্রে :

কম্পিউটার সিস্টেম ব্যাংক ব্যবস্থাকে গতিশীল করে তুলেছে। বেশ কয়েকটি ব্যাংকে চালু হয়েছে অনলাইন সিস্টেম। এখন আর ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম বা দূর দূরান্তের কোনাে জেলায় নগদ টাকা বহন করে নিয়ে যেতে হয় না। কম্পিউটারের সাহায্যে অনলাইন ব্যাংক ব্যবস্থার মাধ্যমে স্থানীয়ভাবে তা সমাধা করা যায় ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে। একজনের হিসাব থেকে অন্য কারও হিসেবে মুহূর্তের মধ্যে টাকা পাঠানাে যায়। সকল ব্যাংকে এ ব্যবস্থা প্রবর্তিত হলে গড়ে উঠবে ডিজিটাল বাংলাদেশ।


অনলাইন তথ্য কেন্দ্র স্থাপন :

বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি তথ্যসেবা জনসাধারণের দোরগােড়ায় পৌছে দেওয়া সম্ভব অনলাইন তথ্যকেন্দ্র স্থাপনের মাধ্যমে। এসব তথ্যকেন্দ্র থেকে মানুষ বিভিন্ন ডাটা বা তথ্য সংগ্রহ করতে পারবে। জানতে পারবে সর্বশেষ প্রাতিষ্ঠানিক অবস্থা ও অবস্থান। বর্তমানে নির্বাচন কমিশন প্রতিটি উপজেলায় সার্ভার স্টেশন প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নিয়েছে। এ সার্ভার স্টেশন চালু হলে ভােটাররা তাদের | নিজ উপজেলায় বসে নতুন ভােটার হওয়া, ভুল সংশােধন, পরিবর্তনসহ যাবতীয় তথ্য আপডেট করতে পারবে। অন্যান্য সেক্টরেও এ ধরনের সার্ভার স্টেশন চালু হলে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে ওঠার স্বপ্ন বাস্তবায়ন ত্বরান্বিত হবে।


উপসংহার : 

বাংলাদেশ একটি উন্নয়নশীল রাষ্ট্র। দেশটিকে উন্নতির দিকে নিয়ে যেতে হলে সর্বক্ষেত্রে উন্নয়ন ঘটাতে হবে। আর উন্নয়ন ঘটাতে হলে কাজের কোনাে বিকল্প নেই। কাজের মধ্যদিয়েই ভালােবাসতে হবে দেশকে। প্রশাসনকে করে তুলতে হবে কার্যকর ও গতিশীল। আধুনিক বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে অগ্রসর হতে হবে। তবেই প্রতিষ্ঠিত হবে ডিজিটাল বাংলাদেশ।

Premium Blogger Templates